সুরা মুলক এর আরবি উচ্চারণ সহ বাংলা অনুবাদ এবং এর ফজিলত সমূহ (2024)

সুরা মুলক পবিত্র কোরআনের ৬৭ তম সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৩০ এবং রুকু সংখ্যা ২। সূরাটি পবিত্র মক্কা নগরীতে নাজিল হয়েছে। যারা কুরআন তিলাওয়াত অনুশীলন করে তাদের জন্য সূরাটি খুবই পুণ্যময়। এই সূরাটি তার তিলাওয়াতকারীর জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করতে থাকেন যতক্ষণ না তাকে ক্ষমা করা হয়।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষকে পাপহীন জীবন দান করার জন্য কুরআন ও সুন্নাহতে অনেক আমলের বর্ণনা দিয়েছেন। লক্ষ্য একটাই যাতে মানুষ পাপহীন জীবন যাপন করতে পারে। সুরা মুলক তাদের মধ্যে একটি।

আজ আমরা সুরা মুলক এর উচ্চারণ ও বাংলা অনুবাদ এবং এর ফজিলত সম্পর্কে পুর্নাঙ্গ আলোচনা করবো। আশা করি অনেক উপকৃত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। ধৈর্য্য ধরে আমাদের সাথেই থাকুন। তো আসুন শুরু করি-

সুরা মুলক এর আরবি উচ্চারণ সহ বাংলা অনুবাদ এবং এর ফজিলত সমূহ (1)

সুরা মুলক

আরবিঃ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

আরবি উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

বাংলা অনুবাদঃ পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

(১)

আরবিঃ تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

আরবি উচ্চারণঃ তাবা-রকাল্লাযী বিইয়াদিহিল্ মুল্কু অহুওয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন্ ক্বদীরু।

বাংলা অনুবাদঃ বরকতময় তিনি যার হাতে সর্বময় কর্তৃত। আর তিনি সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান।

(২)

আরবিঃ الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا وَهُوَ الْعَزِيزُ الْغَفُورُ

আরবি উচ্চারণঃ নিল্লাযী খলাক্বল্ মাওতা অল্ হাইয়া-তা লিইয়াব্লুয়াকুম্ আইয়্যুকুম্ আহ্সানু ‘আমালা-; অহুওয়াল্ ‘আযীযুল্ গফূরু।

বাংলা অনুবাদঃ যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, অতিশয় ক্ষমাশীল।

(৩)

আরবিঃ الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا مَا تَرَى فِي خَلْقِ الرَّحْمَنِ مِنْ تَفَاوُتٍ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرَى مِنْ فُطُورٍ

আরবি উচ্চারণঃ আল্লাযী খলাক্ব সাব্‘আ সামা-ওয়া-তিন্ ত্বিবা-ক্ব-; মা-তার-ফী খর্ল্ক্বি রহ্মানি মিন্ তাফা-ওয়ুত্; র্ফাজ্বিঈ’ল্ বাছোয়ার হাল্ তার-মিন্ ফুত্বর।

বাংলা অনুবাদঃ যিনি সাত আসমান স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। পরম করুণাময়ের সৃষ্টিতে তুমি কোন অসামঞ্জস্য দেখতে পাবে না। তুমি আবার দৃষ্টি ফিরাও, কোন ত্রুটি দেখতে পাও কি?

(৪)

আরবিঃ ثُمَّ ارْجِعِ الْبَصَرَ كَرَّتَيْنِ يَنْقَلِبْ إِلَيْكَ الْبَصَرُ خَاسِئًا وَهُوَ حَسِيرٌ

আরবি উচ্চারণঃ ছুর্ম্মা জ্বি‘ইল্ বাছোয়ার র্কারতাইনি ইয়ান্ক্বলিব্ ইলাইকাল্ বাছোয়ারু খ-সিয়াঁও অহুওয়া হার্সী।

বাংলা অনুবাদঃ অতঃপর তুমি দৃষ্টি ফিরাও একের পর এক, সেই দৃষ্টি অবনমিত ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।

(৫)

আরবিঃ وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِلشَّيَاطِينِ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ

আরবি উচ্চারণঃ অলাক্বদ্ যাইয়্যান্নাস্ সামা-য়াদ্ দুন্ইয়া-বিমাছোয়া-বীহা অজ্বা‘আল্নাহা-রুজুমাল্ লিশ্শাইয়াত্বীনি অআ‘তাদ্না-লাহুম্ ‘আযা-বাস্ সা‘র্ঈ।

বাংলা অনুবাদঃ আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপপঞ্জু দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং সেগুলোকে শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপের বস্তু বানিয়েছি। আর তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের আযাব।

(৬)

আরবিঃ وَلِلَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ

আরবি উচ্চারণঃ অলিল্লাযীনা কাফারূ বিরব্বিহিম্ ‘আযা-বু জ্বাহান্নাম্; অ বি”সাল্ মার্ছী।

বাংলা অনুবাদঃ আর যারা তাদের রবকে অস্বীকার করে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব। আর কতইনা নিকৃষ্ট সেই প্রত্যাবর্তনস্থল!

(৭)

আরবিঃ إِذَا أُلْقُوا فِيهَا سَمِعُوا لَهَا شَهِيقًا وَهِيَ تَفُورُ

আরবি উচ্চারণঃ ইযা য় উল্ক্ব ফীহা- সামি‘ঊ লাহা-শাহীক্বঁও অহিয়া তাফূর।

বাংলা অনুবাদঃ যখন তাদেরকে তাতে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা তার বিকট শব্দ শুনতে পাবে। আর তা উথলিয়ে উঠবে।

(৮)

আরবিঃ تَكَادُ تَمَيَّزُ مِنَ الْغَيْظِ كُلَّمَا أُلْقِيَ فِيهَا فَوْجٌ سَأَلَهُمْ خَزَنَتُهَا أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَذِيرٌ

আরবি উচ্চারণঃ তাকা-দু তামাইয়্যাযু মিনাল্ গাইজ্; কুল্লামা য় উল্ক্বিয়া ফীহা- ফাওজুন্ সায়ালাহুম্ খাযানাতুহা য় আলাম্ ইয়াতিকুম্ নার্যী।

বাংলা অনুবাদঃ ক্রোধে তা ছিন্ন ভিন্ন হবার উপক্রম হবে। যখনই তাতে কোন দলকে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তার প্রহরীরা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘তোমাদের নিকট কি কোন সতর্ককারী আসেনি’?

(৯)

আরবিঃ قَالُوا بَلَى قَدْ جَاءَنَا نَذِيرٌ فَكَذَّبْنَا وَقُلْنَا مَا نَزَّلَ اللَّهُ مِنْ شَيْءٍ إِنْ أَنْتُمْ إِلَّا فِي ضَلَالٍ كَبِيرٍ

আরবি উচ্চারণঃ ক্ব-লূ বালা-ক্বদ্ জ্বা-য়ানা নাযীরুন্ ফাকায্যাব্না-অকুল্না-মা-নায্যালাল্লা-হু মিন্ শাইয়িন্ ইন্ আন্তুম্ ইল্লা-ফী দ্বোয়ালা-লিন্ কার্বী।

বাংলা অনুবাদঃ তারা বলবে, ‘হ্যা, আমাদের নিকট সতর্ককারী এসেছিল। তখন আমরা (তাদেরকে) মিথ্যাবাদী আখ্যায়িত করেছিলাম এবং বলেছিলাম, ‘আল্লাহ কিছুই নাযিল করেননি। তোমরা তো ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছ’।

(১০)

আরবিঃ وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِيرِ

আরবি উচ্চারণঃ অক্ব-লূ লাও কুন্না নাস্মা‘ঊ আও না’ক্বিলু মা-কুন্না ফী য় আছ্হা-বিস্ সা‘র্ঈ।

বাংলা অনুবাদঃ আর তারা বলবে, ‘যদি আমরা শুনতাম অথবা বুঝতাম, তাহলে আমরা জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসীদের মধ্যে থাকতাম না’।

(১১)

আরবিঃ فَاعْتَرَفُوا بِذَنْبِهِمْ فَسُحْقًا لِأَصْحَابِ السَّعِيرِ

আরবি উচ্চারণঃ ফা’তারাফূ বিযাম্বিহিম্ ফাসুহ্ক্বল্ লিআছ্হা-বিস্ সা‘র্ঈ।

বাংলা অনুবাদঃ অতঃপর তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে। অতএব ধ্বংস জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসীদের জন্য।

(১২)

আরবিঃ إِنَّ الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَيْبِ لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ كَبِيرٌ

আরবি উচ্চারণঃ ইন্নাল্লাযীনা ইয়াখ্শাওনা রব্বাহুম্ বিল্গইবি লাহুম্ মাগ্ফিরতুঁও অআজরুন্ কার্বী।

বাংলা অনুবাদঃ নিশ্চয় যারা তাদের রবকে না দেখেই ভয় করে তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও বড় প্রতিদান।

(১৩)

আরবিঃ وَأَسِرُّوا قَوْلَكُمْ أَوِ اجْهَرُوا بِهِ إِنَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ

আরবি উচ্চারণঃ অআর্সিরূ ক্বওলাকুম্ আওয়িজহারূ বিহ্; ইন্নাহূ ‘আলীমুম্ বিযা-তিছ্ ছুর্দূর।

বাংলা অনুবাদঃ আর তোমরা তোমাদের কথা গোপন কর অথবা তা প্রকাশ কর, নিশ্চয় তিনি অন্তরসমূহে যা আছে সে বিষয়ে সম্যক অবগত।

(১৪)

আরবিঃ أَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ وَهُوَ اللَّطِيفُ الْخَبِيرُ

আরবি উচ্চারণঃ আলা-ইয়া’লামু মান্ খলাক; অহুওয়াল্ লাত্বীফুল্ খর্বীর।

বাংলা অনুবাদঃ যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানেন না? অথচ তিনি অতি সূক্ষদর্শী, পূর্ণ অবহিত।

(১৫)

আরবিঃ هُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ ذَلُولًا فَامْشُوا فِي مَنَاكِبِهَا وَكُلُوا مِنْ رِزْقِهِ وَإِلَيْهِ النُّشُورُ

আরবি উচ্চারণঃ হুওয়াল্লাযী জ্বা‘আলা লাকুমুল্ র্আদ্বোয়া যালূলান্ ফা ম্শূ ফী মানা-কিবিহা-অকুলূ র্মি রিয্ক্বিহ্; অইলাইহিন্ নুর্শূর।

বাংলা অনুবাদঃ তিনিই তো তোমাদের জন্য যমীনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে-প্রান্তরে বিচরণ কর এবং তাঁর রিয্ক থেকে তোমরা আহার কর। আর তাঁর নিকটই পুনরুত্থান।

(১৬)

আরবিঃ أَأَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يَخْسِفَ بِكُمُ الْأَرْضَ فَإِذَا هِيَ تَمُورُ

আরবি উচ্চারণঃ আ আমিন্তুম্ মান্ ফিস্ সামা-য়ি আইঁয়্যাখ্সিফা বিকুমুল্ র্আদ্বোয়া ফা ইযা-হিয়া তামূর।

বাংলা অনুবাদঃ যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের সহ যমীন ধসিয়ে দেয়া থেকে কি তোমরা নিরাপদ হয়ে গেছ, অতঃপর আকস্মিকভাবে তা থর থর করে কাঁপতে থাকবে?

(১৭)

আরবিঃ أَمْ أَمِنْتُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ أَنْ يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا فَسَتَعْلَمُونَ كَيْفَ نَذِيرِ

আরবি উচ্চারণঃ আম্ আমিন্তুম্ মান্ ফিস্ সামা-য়ি আইঁ ইর্য়ুসিলা ‘আলাইকুম্ হা-ছিবা-; ফাসাতা’লামূনা কাইফা নার্যীর।

বাংলা অনুবাদঃ যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের উপর পাথর নিক্ষেপকারী ঝড়ো হাওয়া পাঠানো থেকে তোমরা কি নিরাপদ হয়ে গেছ, তখন তোমরা জানতে পারবে কেমন ছিল আমার সতর্কবাণী?

(১৮)

আরবিঃ وَلَقَدْ كَذَّبَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَكَيْفَ كَانَ نَكِيرِ

আরবি উচ্চারণঃ অলাক্বদ্ কায্যাবাল্ লাযীনা মিন্ ক্বব্লিহিম্ ফাকাইফা কা-না নার্কীর।

বাংলা অনুবাদঃ আর অবশ্যই তাদের পূর্ববর্তীরাও অস্বীকার করেছিল। ফলে কেমন ছিল আমার প্রত্যাখ্যান (এর শাস্তি)?

(১৯)

আরবিঃ أَوَلَمْ يَرَوْا إِلَى الطَّيْرِ فَوْقَهُمْ صَافَّاتٍ وَيَقْبِضْنَ مَا يُمْسِكُهُنَّ إِلَّا الرَّحْمَنُ إِنَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ بَصِيرٌ

আরবি উচ্চারণঃ আওয়া লাম্ ইয়ারও ইলাতত্বোয়াইরি ফাওক্বহুম্ ছোয়া-ফ্ফা-তিঁও অইয়াকবিদন্; মা -ইয়ুম্সিকুহুন্না ইর্ল্লা রহ্মা-ন্; ইন্নাহূ বিকুল্লি শাইয়িম্ বার্ছীর।

বাংলা অনুবাদঃ তারা কি লক্ষ্য করেনি তাদের উপরস্থ পাখিদের প্রতি, যারা ডানা বিস্তার করে ও গুটিয়ে নেয়? পরম করুণাময় ছাড়া অন্য কেউ এদেরকে স্থির রাখে না। নিশ্চয় তিনি সব কিছুর সম্যক দ্রষ্টা।

(২০)

আরবিঃ أَمَّنْ هَذَا الَّذِي هُوَ جُنْدٌ لَكُمْ يَنْصُرُكُمْ مِنْ دُونِ الرَّحْمَنِ إِنِ الْكَافِرُونَ إِلَّا فِي غُرُورٍ

আরবি উচ্চারণঃ আম্মান্ হা-যাল্ লাযী হুওয়া জুন্দুল্ লাকুম্ ইয়ান্ছুরুকুম্ মিন্ দূর্নি রহ্মা-ন্; ইনিল্ কা-ফিরূনা ইল্লা-ফী গুর্রূর।

বাংলা অনুবাদঃ পরম করুণাময় ছাড়া তোমাদের কি আর কোন সৈন্য আছে, যারা তোমাদেরকে সাহায্য করবে ? কাফিররা শুধু তো ধোঁকায় নিপতিত।

(২১)

আরবিঃ أَمَّنْ هَذَا الَّذِي يَرْزُقُكُمْ إِنْ أَمْسَكَ رِزْقَهُ بَلْ لَجُّوا فِي عُتُوٍّ وَنُفُورٍ

আরবি উচ্চারণঃ আম্মান্ হা-যাল্ লাযী ইর্য়াযুকুকুম্ ইন্ আম্সাকা রিয্কাহূ বাল্ লাজ্বজু ফী ‘উতুয়িঁও অনুর্ফূ।

বাংলা অনুবাদঃ অথবা এমন কে আছে, যে তোমাদেরকে রিয্ক দান করবে যদি আল্লাহ তাঁর রিয্ক বন্ধ করে দেন? বরং তারা অহমিকা ও অনীহায় নিমজ্জিত হয়ে আছে।

(২২)

আরবিঃ أَفَمَنْ يَمْشِي مُكِبًّا عَلَى وَجْهِهِ أَهْدَى أَمَّنْ يَمْشِي سَوِيًّا عَلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ

আরবি উচ্চারণঃ আফামাইঁ ইয়াম্শী মুকিব্বান, ‘আলা-ওয়াজহিহী য় আহ্দা য় আম্মাইঁ ইয়াম্শী সাওয়িয়্যান্ ‘আলা-ছির-ত্বিম্ মুস্তাক্বীম্।

বাংলা অনুবাদঃ যে ব্যক্তি উপুড় হয়ে মুখের উপর ভর দিয়ে চলে সে কি অধিক হিদায়াতপ্রাপ্ত নাকি সেই ব্যক্তি যে সোজা হয়ে সরল পথে চলে ?

(২৩)

আরবিঃ قُلْ هُوَ الَّذِي أَنْشَأَكُمْ وَجَعَلَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْأَبْصَارَ وَالْأَفْئِدَةَ قَلِيلًا مَا تَشْكُرُونَ

আরবি উচ্চারণঃ কুল্ হুওয়াল্ লাযী য় আন্ শায়াকুম্ অজ্বা‘আলা লাকুমুস্ সাম্‘আ অল্ আব্ছোয়া-র অল্ আফ্য়িদাহ্; ক্বলীলাম্ মা-তাশ্কুরূন্।

বাংলা অনুবাদঃ বল, ‘তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জন্য শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি এবং অন্তকরণসমূহ দিয়েছেন। তোমরা খুব অল্পই শোকর কর’।

(২৪)

আরবিঃ قُلْ هُوَ الَّذِي ذَرَأَكُمْ فِي الْأَرْضِ وَإِلَيْهِ تُحْشَرُونَ

আরবি উচ্চারণঃ কুল্ হুওয়াল্ লাযী যারয়াকুম্ ফিল্ র্আদ্বি অইলাইহি তুহ্শারূন্।

বাংলা অনুবাদঃ বল, ‘তিনিই তোমাদেরকে যমীনে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর কাছেই তোমাদেরকে সমবেত করা হবে’।

(২৫)

আরবিঃ وَيَقُولُونَ مَتَى هَذَا الْوَعْدُ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ

আরবি উচ্চারণঃ অইয়াকুলূনা মাতা- হা-যাল্ ওয়া’দু ইন্ কুনতুম ছোয়া-দিক্বীন।

বাংলা অনুবাদঃ আর তারা বলে, ‘সে ওয়াদা কখন বাস্তবায়িত হবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।

(২৬)

আরবিঃ قُلْ إِنَّمَا الْعِلْمُ عِنْدَ اللَّهِ وَإِنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُبِينٌ

আরবি উচ্চারণঃ কুল ইন্নামাল্ ই’ল্মু ই’ন্দাল্লা-হি ইন্নামা য় আনা নাযীরুম মুবীন।

বাংলা অনুবাদঃ বল, ‘এ বিষয়ের জ্ঞান আল্লাহরই নিকট। আর আমি তো স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র’।

(২৭)

আরবিঃ فَلَمَّا رَأَوْهُ زُلْفَةً سِيئَتْ وُجُوهُ الَّذِينَ كَفَرُوا وَقِيلَ هَذَا الَّذِي كُنْتُمْ بِهِ تَدَّعُونَ

আরবি উচ্চারণঃ ফালাম্মা- রায়াওহু যুল্ফাতান্ সী-য়াত্ উজুহুল্ লাযীনা কাফারূ অক্বীলা হা-যাল্ লাযী কুন্তুম্ বিহী তাদ্দা‘ঊন্ ।

বাংলা অনুবাদঃ অতঃপর তারা যখন তা আসন্ন দেখতে পাবে, তখন কাফিরদের চেহারা মলিন হয়ে যাবে এবং বলা হবে, ‘এটাই হল তা, যা তোমরা দাবী করছিলে’।

(২৮)

আরবিঃ قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَهْلَكَنِيَ اللَّهُ وَمَنْ مَعِيَ أَوْ رَحِمَنَا فَمَنْ يُجِيرُ الْكَافِرِينَ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ

আরবি উচ্চারণঃ কুল্ আরয়াইতুম্ ইন্ আহ্লাকানিয়াল্লা-হু অমাম্ মা’ইয়া আও রহিমানা-ফামাইঁ ইয়ুজ্বীরুল্ কা-ফিরীনা মিন্ ‘আযা-বিন্ আলীম্।

বাংলা অনুবাদঃ বল, ‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি’? যদি আল্লাহ আমাকে এবং আমার সাথে যারা আছে, তাদেরকে ধ্বংস করে দেন অথবা আমাদের প্রতি দয়া করেন, তাহলে কাফিরদেরকে যন্ত্রণাদায়ক আযাব থেকে কে রক্ষা করবে’?

(২৯)

আরবিঃ قُلْ هُوَ الرَّحْمَنُ آمَنَّا بِهِ وَعَلَيْهِ تَوَكَّلْنَا فَسَتَعْلَمُونَ مَنْ هُوَ فِي ضَلَالٍ مُبِينٍ

আরবি উচ্চারণঃ কুল্ হুওর্য়া রহ্মা-নু আ-মান্না- বিহী অ‘আলাইহি তাওয়াক্কাল্না-ফাসাতা’লামূনা মান্ হুওয়া ফী দ্বোয়ালা-লিম্ মুবীন্।

বাংলা অনুবাদঃ বল, ‘তিনিই পরম করুণাময়। আমরা তাঁর প্রতি ঈমান এনেছি এবং তাঁর উপর তাওয়াক্কুল করেছি। কাজেই তোমরা অচিরেই জানতে পারবে কে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে’?

(৩০)

আরবিঃ قُلْ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَصْبَحَ مَاؤُكُمْ غَوْرًا فَمَنْ يَأْتِيكُمْ بِمَاءٍ مَعِينٍ

আরবি উচ্চারণঃ কুল্ আরায়াইতুম্ ইন্ আছ্বাহা মা-য়ুকুম্ গওরন্ ফামাইঁ ইয়া’তীকুম্ বিমা-য়িম্ মা‘ঈন্।

বাংলা অনুবাদঃ বল, ‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভে চলে যায়, তাহলে কে তোমাদেরকে বহমান পানি এনে দিবে’ ?

সুরা মুলক এর ফজিলত

রাতে সুরা মুলক পাঠ করা উত্তম কিন্তু অন্য যে কোন সময় এটি পাঠ করা যেতে পারে। অর্থ বুঝে নিয়মিত পাঠে এর একটি অনন্য তাৎপর্য রয়েছে। নামাজের সাথেও এই সূরা পাঠ করা উত্তম। যদি আপনি এটি মুখস্থ না পারেন, তাহলে দেখে দেখে এর অর্থ বুঝে পড়েও আপনি অনেক সওয়াবের অধিকারী হতে পারেন।

হাদিসে বর্ণিত আছে-

– হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু একজন লোককে বললেন, “আমি কি তোমার কাছে এমন একটি হাদিস বর্ননা করব যা শুনে তুমি খুশি হবে?” তিনি উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, শুনান।” ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বললেন: সূরা মূলক নিজে পাঠ করুন এবং আপনার পরিবার এবং প্রতিবেশীদেরকে এটি শেখান, কারণ এটি মুক্তিদাতা এবং বিতর্ককারী সূরা। কিয়ামতের দিন সে আল্লাহর সাথে তর্ক করবে এবং তার পাঠককে জাহান্নামের আযাব থেকে এবং কবরের আযাব থেকে রক্ষা করবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমার ইচ্ছা হল এই সূরাটি আমার প্রত্যেক উম্মতের অন্তরে মুখস্থ করা।’ (ইবনে কাসীর)

– হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, কুরআনে ৩০ (ত্রিশ) আয়াত সম্বলিত একটি সূরা আছে, যে সূরাটি তার তেলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশ করা আবশ্যক, যতক্ষণ না তাকে ক্ষমা করা হয়। আর সূরাটি হল সূরা মূলক। ‘(মুসনাদে আহমদ, তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)

– নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমার মন চায় প্রতিটি মুমিন যেন তার অন্তরে সুরা মুলক মুখস্থ রাখে।’ (বায়হাকী)

– হযরত ইবনে আব্বাস (রা।) বলেছেন, ‘সূরা মূলক শিখুন এবং আপনার স্ত্রী ও সন্তানদের শিক্ষা দিন। এটি তাকে কবরের আযাব থেকে রক্ষা করবে এবং কিয়ামতের দিন আল্লাহর দরবারে এই সূরার পাঠকের পক্ষে কথা বলে তাকে মুক্ত করবে। ‘

– নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিয়মিত সুরা মুলক পাঠ করবে সে কবরের আযাব থেকে মুক্তি পাবে।’ (তিরমিযী, হাকিম থেকে মুস্তাদরা)

হাদিসে আরো বর্ণিত হয়েছে-
– নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুরা মুলক পাঠ না করে রাতে ঘুমাতে যেতেন না। ‘(তিরমিযী)

– হযরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলিফ লাম মিম তানজিল ও তবারাকাল্লাজি পাঠ না করে কখনো ঘুমাতে যান নি। ‘

– সূরা মূলক ৪১ (একচল্লিশ) বার তিলাওয়াত করলে সব বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং ঋণ পরিশোধ হয়। এই সূরাটি পাঠ করলে কবরের আযাব থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য যে, নবী (সাঃ) সুরা মুলক পাঠ না করে ঘুমাতে যেতেন না এমন বর্ণনার উপর ভিত্তি করে বুজুর্গানে আলেম ও ধর্মীয় পণ্ডিতগণ এশার নামাজের পর সূরা মূলক পাঠ করতে বলেছেন। অতএব, রাতে ঘুমানোর আগে অথবা এশার নামাজের পর সুরা মুলক পাঠ করা যেতে পারে।

আজকের আলোচনায় আমরা হাদিসের বর্ননায় সুরা মুলক এর যে ফজিলত সম্পর্কে জানতে পারলাম আল্লাহ তাআলা আমাদের সকল মুসলিম উম্মাহকে নিয়মিত সুরা মুলক পাঠ করার এবং বুঝার তাওফিক দান করুন। এবং সে সাথে হাদিসে ঘোষিত ফজিলত লাভের তাওফিক দান করুন। আমীন

surah mulk

surah mulk bangla

Related Posts:

  • সুরা ফাতিহা
  • সূরা আসর বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ
  • সূরা কাহাফ বাংলা উচ্চারণ ও অনুবাদ সহ
  • সূরা যিলযাল বাংলা উচ্চারণ ও অনুবাদ
  • সূরা তীন বাংলা উচ্চারণ ও অনুবাদ সহ
সুরা মুলক এর আরবি উচ্চারণ সহ বাংলা অনুবাদ এবং এর ফজিলত সমূহ (2024)
Top Articles
Latest Posts
Recommended Articles
Article information

Author: Golda Nolan II

Last Updated:

Views: 5581

Rating: 4.8 / 5 (58 voted)

Reviews: 81% of readers found this page helpful

Author information

Name: Golda Nolan II

Birthday: 1998-05-14

Address: Suite 369 9754 Roberts Pines, West Benitaburgh, NM 69180-7958

Phone: +522993866487

Job: Sales Executive

Hobby: Worldbuilding, Shopping, Quilting, Cooking, Homebrewing, Leather crafting, Pet

Introduction: My name is Golda Nolan II, I am a thoughtful, clever, cute, jolly, brave, powerful, splendid person who loves writing and wants to share my knowledge and understanding with you.